সকাল সকাল ডেস্ক।
সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি বিহারের ভোটার তালিকার বিশেষ গভীর পুনরীক্ষণ (এসআইআর) সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে একে ভোটারবান্ধব প্রক্রিয়া আখ্যা দিয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি সন্তোষজনক মন্তব্য। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়—এই মামলা আর কতদিন ঝুলে থাকবে? যত দ্রুত এর নিষ্পত্তি হবে ততই উত্তম, কারণ কিছু বিরোধী দল এ নিয়ে সস্তার রাজনীতি করতে বদ্ধপরিকর। তারা এমন প্রচার চালাচ্ছে যেন এই পুনরীক্ষণ প্রক্রিয়ার আড়ালে নির্বাচন কমিশন ইচ্ছে করেই কিছু বিশেষ ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দিতে চাইছে, যাতে বিজেপি নির্বাচনী সুবিধা পায়।
এই অভিযোগকে জোরদার করতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী পর্যন্ত বলে ফেলেছেন যে গত লোকসভা নির্বাচনে ভোট চুরি হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—যদি সত্যিই ভোট চুরি হয়ে থাকে তবে কংগ্রেস কীভাবে ৯৯টি আসনে জিতল? আর বিজেপি-ই বা কেন ২৪০-এ সীমাবদ্ধ রইল? বাস্তবতা হলো, ওই ৯৯টি আসন পাওয়ার কারণেই রাহুল গান্ধী আজ বিরোধী দলনেতা হতে পেরেছেন। এই প্রেক্ষাপট তিনি উপেক্ষা করছেন।
এটিও বিস্ময়কর যে বিহারের ভোটার তালিকার প্রথম খসড়া প্রকাশের ১৩ দিন পরও কোনো রাজনৈতিক দল লিখিত আপত্তি দাখিল করেনি। বরং তারা কমিশনের ছোটখাটো ভুলকে অতিরঞ্জিত করে চিৎকার-চেঁচামেচি করছে। এটিই “তিলকে তাল” বানানো ছাড়া আর কিছু নয়। দেশে এমন কোনো প্রক্রিয়া নেই যেখানে একেবারেই গলদ থাকে না। কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকাকালে যখন আধার চালু হয়েছিল তখন কি সব কিছু নির্ভুলভাবে সম্পন্ন হয়েছিল? আবার ফটো-ভোটার আইডি চালুর সময় কি কমিশনের একটিও ভুল হয়নি?
ভোটার পরিচয়পত্র তৈরি বা যাচাইয়ের সময় কোনো ত্রুটি হওয়া উচিত নয়, এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু কংগ্রেস কি দাবি করতে পারে যে তাদের আমলে কমিশনের প্রতিটি কাজ ভুলত্রুটিমুক্ত ছিল? উদাহরণস্বরূপ, বিহারের এক মহিলার ভোটার আইডিতে বয়স ৩৫-এর জায়গায় ১২৪ লেখা পড়েছে। এটিকে বড় করে দেখানো হলেও এমন বিচ্ছিন্ন ভুল যে কোনো রাজ্যে ঘটতে পারে।
প্রকৃত দায়িত্ব বিরোধীদেরই নেওয়া উচিত—কমিশনের প্রক্রিয়াকে আরও সঠিক করতে সহযোগিতা করা, নিজেদের আপত্তি আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দেওয়া। কিন্তু তারা তা এড়িয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ আর রাজনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে আসলে তারা ভোটারদের স্বার্থকেই উপেক্ষা করছে।
সুপ্রিম কোর্ট যেমন বলেছে, এই পুনরীক্ষণ প্রক্রিয়া ভোটারবান্ধব। তাই বিরোধীদের উচিত একে বাধাগ্রস্ত না করে সহায়ক ভূমিকা পালন করা। কমিশনের ছোটখাটো ত্রুটি নিয়ে অযথা হইচই না করে, ভোটার তালিকাকে যতটা সম্ভব নিখুঁত করার কাজে সক্রিয় সহযোগিতা করাই গণতন্ত্রের স্বার্থে শ্রেয়।
No Comment! Be the first one.